প্রামান্যচিত্র - গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের জীবন ও সাহিত্য

এটাই হলো কলম্বিয়ার সাহিত্য।

আমি নিশ্চিত যে খুব মানুষেরই এই কবিতাটি মনে আছে।

কলম্বিয়া, ৬ মার্চ ১৯২৭।

আরাকাতাকা নামের একটি ছোট্ট শহরের আশপাশের কলা খামারগুলোতে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।

সেদিন, অতলান্তিক মহাসাগর এবং ক্রান্তিবলয়ের যৌথ চিহ্নের নীচে

জন্মগ্রহণ করেছিলেন গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ।

৫৫ বছর পরে, নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভুষিত হলেন এই লেখক

যার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম সমগ্র বিশ্ব জুড়ে সমাদৃত হয়েছে।

আমার জন্মের পর থেকেই আমি জানতাম

যে একদিন আমি লেখক হবো।

আমি লেখক হতে চেয়েছিলাম, লেখক হবার বাসনা, ইচ্ছাশক্তি, মনোভাব

সবই আমার ছিল। আমি সবসময়ই কিছু না কিছু লিখতাম।

আমি কখনো ভাবিনি যে আমার দ্বারা আর কিছু করা সম্ভব

আমি কখনো ভাবিনি যে লেখালেখি করে আমি কোনদিন জীবনধারণ করতে পারবো

কিন্তু লেখক হতে গিয়ে যদি আমাকে না খেয়ে মরতে হয়

আমি তার জন্যেও প্রস্তুত ছিলাম।

এই দৃঢ়সংকল্প বক্তা - সাহিত্যের জন্যে যিনি যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি ছিলেন

'শতবর্ষের নি:সঙ্গতা' উপন্যাস লিখে তিনি পৃথিবীর একটি নতুন ভিশনের জন্ম দেন

মাকোন্দো, ক্যারিবীয় উপকুলের একটি ছোট গঞ্জ শুধু নয়...

...বরং একটি গোটা মহাদেশ।

কিন্তু এই পৃথিবীর আদি উৎস কি?

এই উপন্যাস যার ঘটনা সব সত্যি অথচ স্বপ্নের মত

একটি ভুতুড়ে গল্প যাতে আমরা ভয় পাই না

একটি ছোট বালক সে কি করে যাদুকরে রূপান্তরিত হয়?

একদম শুরুতে ছিলেন একজন মাতামহ, নিকোলাস মার্কেজ, কর্নেল সাহেব।

এক ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান, কলম্বিয়ার রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে (১৮৯৯-১৯০২) লড়াই করেছিলেন।

কর্নেলের একজন বন্ধু ছিল, খুব প্রিয় বন্ধু, যুদ্ধের সময় থেকে

নাম মেদার্দো পাচেকো

অথচ ১৯০৮ সালের অক্টোবর মাসে দুজন একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করলেন

ডুয়েল লড়বেন, সম্ভ্রমের প্রশ্নে

কর্নেলের গুলিতে পাচেকোর মৃত্যু হলো

কিন্তু তার শোক এত প্রবল, এতই অসীম

যেন তিনি নিজেকেই হত্যা করেছেন।

বিহ্বল কর্নেল তার জন্মের শহর ছেড়ে নির্বাসনে চলে গেলেন

সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালার অপর প্রান্তে

অজানা এক গ্রামের উদ্দেশ্যে

কুড়ি বছর পেরিয়ে যায়

কর্নেল সাহেবের কন্যা, তার দুই চোখের মনি

লুইসা বড় হয়ে ওঠে

এবং গঞ্জের টেলিগ্রাফ অপারেটরের প্রেমে পড়ে যায়, প্রবল ভাবে