আমি একজন রাঁধুনি
এবং খাদ্যবিশারত
কিন্তু আমি শিক্ষক পরিবারের সন্তান
আমার বোন শিকাগো তে
বিশেষ শিক্ষার্তীদের শিক্ষক|
আমার বাবা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক যিনি
২৫বছর ধরে পঞ্চম শ্রেণীতে শিক্ষাদান করেছেন|
আমার পিসি এবং কাকা অধ্যাপক ছিলেন|
আমার ভাই বোনেরা সবাই শিক্ষকতা করেন
আমার পরিবারে প্রায় সবাই শিক্ষকতা
করেন,শুধু আমি ব্যতিক্রম,
তারা আমায় শিখিয়েছে যে
সঠিক উত্তর পেতে হলে
সঠিক প্রশ্ন করতে হবে
সুতরাং আমাদের সন্তানদের
শিক্ষাজনিত ফলাফলের উন্নতি করার জন্য
সঠিক প্রশ্ন কি হতে পারে?
এখানে অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আছে
আমি মনে করি নিচের উক্তিগুলি
আলোচনার এটা সঠিক জায়গা:
আমরা একজন শিশুর মানসিক বৃদ্ধি
এবং তার দৈহিক বৃদ্ধির মধ্যে
সম্পর্ক কি বুঝি?
আমাদের বাচ্চারা কি শিখবে বলে আমরা আশা
করতে পারি
যদি তাদের খাদ্যতালিকায় শুধুই শর্করা
থাকে কিন্তু পুষ্টির জায়গা খালি থাকে?
তারা কি শিখবে যদি
যদি তারা ক্ষুদার্থ থাকে?
আমরা যে এত সম্পদ তাদের স্কুল এ দিচ্ছি,
একবার দাঁড়িয়ে নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে:
সত্যি কি আমরা আমাদের সন্তানদের
সফলতার জন্য সঠিক পদক্ষেপ করছি?
কিছু বছর আগে,
আমি "Chopped" নামক এক রান্ধন
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলাম|
চারজন রাঁধুনি প্রতিযোগিতায় অংশ
নিয়েছিলেন তাদের রান্নার গোপনীয় উপাদান নিয়ে
কে সবথেকে ভালো রান্না করতে পারে.
কিন্তু এই এপিসোড টি বিশেষ ছিল.
সাধারণত চারজন প্রবল উদ্দীপনাপূর্ণ
রাঁধুনি প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা করে-
যার সম্বন্ধে আমার কোনো ধারণা নেই--
(হাসি)
এই রাঁধুনিরা ছিলেন স্কুলের
রাঁধুনি
আপনারা যাদের "লাঞ্চ লেডিস" বলেন,
আমি অনুরোধ করছি আপনারা
তাদের "স্কুলের রাঁধুনি" বলুন
এইসমস্ত মহিলারা- ভগবান সহায় হন
এই সমস্ত মহিলাদের প্রতি -
তারা হাজার হাজার ছেলে মেয়েদের জন্য
রান্না করে প্রতিদিন,
প্রাতরাশ ও দুপুরের খাবার,শুধুমাত্র
$2.68 তে প্রতি দুপুরের খাবারের পিছু ,
এর মধ্যে খাবারের জন্য বরাদ্ধ এক ডলার|
এই এপিসোড এ,
প্রধান খাবারের গোপনীয় উপাদান ছিল কিনওয়্যা
আপনারা স্কুলের খাবার
বহুদিন আগে খেয়েছেন,
এবং এখন আমরা খাবারের
পৌষ্টিকতা বাড়িয়েছি অনেক,
কিন্তু কিনওয়্যা এখনো প্রধান খাদ্য রূপে
বেশিরভাগ স্কুলের রান্নারঘরে ব্যাবৃত নয়
(হাসি)
সুতরাং ইটা একটা চ্যালেঞ্জ|
আমি একটা পদের কথা কোনোদিন ভুলতে
পারবোনা যেটা রান্না করেছিলেন
চেরিল বারবারা নামক ভদ্রমহিলা.
চেরিল ছিলেন কোনেটিকাট এর
একটি হাই স্কুল কমুনিটির পুষ্টি
বিভাগের পরিচালক.
উনি সুস্বাদু পাস্তা রান্না করেছিলেন|
এটি অপূর্ব ছিল|
এটি ছিল পাপ্পারডেলে এর সাথে ইতালিয়ান সসেজ,
কালে,পার্মেসান চেজে|
এটার স্বাদ রাস্তার খাবারের মতন
সুন্দর ছিল, কিন্তু-
তিনি কিনওয়্যা অর্ধসিদ্ধ করে তা রান্নায়
দিয়ে দিয়েছিলেন|
এইটা একটা অদ্ভুত সিদ্ধান্ত ছিল,
এবং এইটা ভীষণ কর মর করছিলো|
(হাসি)
সেইজন্য আমি তাকে অভিযুক্ত
করার শুরে জিজ্ঞাসা করলাম,
তিনি কেন এইভাবে রান্না করলেন|
চেরিল বললেন, "প্রথমত আমি জানিনা
কিনওয়্যা জিনিসটা কি"|
(হাসি)
"কিন্তু আমি এটুকু জানি যে আজ সোমবার,
এবং আমার কমুনিটির হাই স্কুল এ,
আমি এদিন পাস্তা রান্না করি "|
চেরিল ব্যাখ্যা করলেন
যে ওনার বেশিরভাগ বাচ্চাদের,
সপ্তাহান্তে কোনো খাবার থাকেনা|
শনিবারে কোনো খাবার থাকেনা|
রবিবারেও কোনো খাবার থাকেনা|
সেইজন্য তিনি পাস্তা রান্না করতেন
যেটা জানতেন বাচ্চারা ঠিক খাবে|
যেটা তাদের গায়ে লাগবে,
তিনি বললেন.
যাতে তাদের পেট ভরবে|
সোমবার দেখাযায়,
তার বাচ্চাদের খিদের নাভিশ্বাস এতটাই ওঠে
তাদের পড়াতে মন বসেনা
শুধু মাত্র খাবারের কথা ই তারা চিন্তা করে|
শুধুমাত্র খাদ্য|
পরিসংখ্যা ও তাই বলে|
আচ্ছা বাচ্চাদের প্রসঙ্গে আশা যাক|
বাচ্চাদের দিনের মূল
খাবার প্রাতরাশ সম্বন্ধে
আলোচনা করা যাক|
আলাপ করুন এলিসন এর সাথে.
তার বারো বছর বয়স,
সে অত্যন্ত চালাক
এবং সে বড়ো হয় এক প্রকৃতিবিজ্ঞানী হতে চায়|
যদি এলিসন এমন একটি স্কুল এ যায় যেখানে
প্রতিটি বাচ্চাকে পুষ্টিকর
প্রাতরাশ দেয়া হয়, তাহলে কি হয়|
তাহলে তাদের পুষ্টিকর খাদ্য,যেমন
ফল ও দুধ,যেখানে নুন ও চিনির
মাত্রা কম থাকে,
এমন খাদ্য পাবার সম্ভবনা
বাড়ে|
এলিসনের অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায়
স্থূলস্তার মাত্রা কম হবে|
তাকে চিকিৎসকের কাছে কম যেতে হবে.
তার উদ্বেগ ও বিষন্নতা কম হবে|
তুলনামূলক ভাবে তার ব্যবহার
,উপস্থিতি ও যথাকালীনতা সঠিক হবে|
কেন?
কারণ তার জন্য স্কুল এ ভালো
খাবার অপেক্ষা করছে|
সামগ্রিক ভাবে এলিসন এর
সাস্থ স্কুল এর অন্যান্য
বাচ্চাদের থেকে ভালো হবে|
তাহলে সে সব বাচ্চাদর
ক্ষেত্রে কি হবে যাদের জন্য
পুষ্টিকর খাদ্য স্কুলে নেই|
আলাপ করুন টমির সাথে|
তার ও বয়স ১২. সেও এক চমৎকার শিশু|
সে এক চিকিৎসক হতে চায়|
টমি যখন স্কুলের শিশু বিভাগে,
তখন সে গণিত এ দুর্বল ছিল|
যখন সে তৃতীয় বিভাগে ছিল তখন,
তার গণিত ও পঠনে কম নম্বর এসেছিলো|
বোঝা যাচ্ছিলো ১১বছর বয়সে
তাকে একই শ্রেণীতে পুনরায় থাকতে হবে|
গবেষণায় দেখা যায়,যে বাচ্চারা
ধারাবাহিক ভাবে পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ
করছেনা,বিশেষত প্রাতরাশ,
তাদের মধ্যে জ্ঞানের প্রকাশ কম হচ্ছে|
এই সমস্যাটি কতটা বিস্তারিত?
দুর্ভাগ্যবশত এটা বহুদূর বিসৃত|
দুটি পরিসংখানে দেখে
মনে হচ্ছে এই সমস্যার দুটি প্রান্ত,কিন্তু
আসলে এটি একটি মুদ্রার দুটি দিক|
এক দিকে,
১/৬ আমেরিকাবাসি খাদ্যের
দিক থেকে নিরাপত্তাহীন,
এর মধ্যে ১৬ মিলিয়ন বাচ্চা-
প্রায় ২০ শতাংশ-
খাদ্য নিরাপত্তাহীন|
শুধুমাত্র নিউ ইয়র্ক শহরে,
৪৭৪,০০০ বাচ্চা ,যারা ১৮ বছরের নিচে
প্রত্যেক বছরে ক্ষুদার্ত থাকে|
এটা বিস্ময়কর|
অন্য দিকে,
অপুষ্টি এই দেশে মৃত্যুর
প্রধান কারণ|
এবং যে সমস্ত বাচ্চার সম্পর্কে আলোচনা করছি
তাদের ১/৩ ভাগ শিশু দিয়াবেটিসের
দিকে এগিয়ে যাচ্ছে.
সমস্ত কিছু নিয়ে বিচার করলে দেখা যাচ্ছে
এদের মধ্যে বেশির ভাগ বাচ্চাই একই
সমস্যার শিকার,
তাদের চারপাশের পরিবেশ থেকে তারা
যে সমস্ত অস্বাস্থ্যকর
ও সস্তা খাবার পায়ে,যেটা তাদের পরিবার
জোগাড় করতে পারে তাই গ্রহণ করে|
মাসের শেষে,
কাজের সময় কমিয়ে দেওয়ায়,
মজুরি ও কমে যায়, ফলে তারা সামান্য
খাবার ও জোগাড় করতে পারেনা|
কিন্তু আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারি.
তাইনা?
আমরা এর উত্তর জানি|
আমার হোয়াইট হাউসের কাজের একটি অংশ ছিল,
আমরা কিছু স্কুল নিয়ে একটি সমীক্ষা
আরম্ভ করেছিলাম,যেখানে ৪০ শতাংশ বাচ্চা
দারিদ্রসীমার নিচে থেকে আসে,আমরা সেখানে
বিনাপয়সায় প্রাতরাশ ও মধ্যাহ্নভোজ দিতাম
প্রতিটি বাচ্চাকে|
এই প্রোগ্র্যামটি খুবই সফলতা পেয়েছিলো
কারণ এটা আমাদের একটা বিরাট বাধা
অতিক্রম করতে সাহায্য করেছিল
যেটা ছিল বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার
পাওয়ার বিসয়|
এটা ছিল মর্যাদা হানির বাধা|
স্কুল আরম্ভের আগে প্রাতরাশ দেয়া হতো,
এবং এটা শুধুমাত্র গরিব বাচ্চাদের দেয়া হতো|
এর থেকে জানা যেত কারা গরিব এবং
কাদের সরকারের সহযোগিতার প্রয়োজন আছে|
বাবা মার রোজগার কম বা বেশি যাই
হোক,বাচ্চাদের মধ্যে
গর্ববোধ আছে তা নিয়ে|
তাহলে কি দেখা যায়?
যে সমস্ত স্কুল এই সমীক্ষা শুরু করেছিল
তাদের বাচ্চাদের গণিত ও পঠনে
১৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছিলো|
১৭.৫ শতাংশ|
গবেষণায় দেখা যায় যখন শিশুরা ধারাবাহিক
ভাবে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে,
তাদের স্নাতক হওয়ার সম্ভাবনা
২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়|
২০ শতাংশ|
যখন আমরা বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার দি,
তখন তাদের উন্নতিলাভের সম্ভাবনা বাড়ে,
শ্রেণীকক্ষের ভিতর ও বাইরে|
আমার কথা বিশ্বাস না হলে,তোমাদের
দনা মার্টিনের সাথে কথা বলা দরকার|
আমি দনা মার্টিনকে পছন্দ করি|
দনা মার্টিন হলো ব্রুক কাউন্টির স্কুলের
পুষ্টি বিভাগের অধিকর্তা,
বায়নেসবোরো,জর্জিয়াতে|
ব্রুক কাউন্টি হচ্ছে সব থেকে গরিব জেলা
যেটা দেশের পঞ্চম গরিবতম প্রদেশ|
এবং ১০০ শতাংশ ডোনার শিক্ষার্তীরা
দারিদ্রসীমার সমান্তরালে বা নিচে বাশ করে|
কিছু বছর আগে,
পুষ্টির যে নতুন মান চালু করা হয়েছিল,
দনা তা আরো অগ্রসর করতে চেয়েছিলেন,
এবং নিজস্ব তৈরী করা পুষ্টির
মান বাস্তবায়ন করেন|
তিনি খাদ্যতালিকা উন্নত করে তাতে ফল,
সবজি ও খাদ্যশস্য যুক্ত করেছিলেন|
শ্রেণীকক্ষয়ে প্রাতরাশ বিতরণ ও আরম্ভ করেন|
তিনি রাতের খাবারের ব্যবস্থা করলেন|
কেন?
বেশিরভাগ বাচ্চাই বাড়িতে গিয়ে রাতের
খাবার আর খেতোনা|
তারা কিভাবে সারা দিলো?
বাচ্চার খাবার পছন্দ করত.
তাদের এই পুষ্টি ভালো লাগতো এবং
ক্ষুদার্ত বোধ না করায় তাদের
ভালো লাগতো।
কিন্তু ডোনার সবথেকে বোরো সমর্থকরা
অপ্রত্যয়শী জায়গা থেকে এসেছিল।
তার নাম এরিক পার্কার,
তিনি ছিলেন প্রধান ফুটবল কোচ
ব্রুক কাউন্টি বেয়ার্সের।
পার্কার অনেক বছর ধরেই মাঝারি
মাপের ফুটবল দলকে কোচ করতেন।
দলটি মাঝারি ধরণের সফলতা পেত-
একটি ফুটবল মনস্ক দেশের উনিয়নের
এটা হতাশার
কারণ ছিল।
যে বছর দনা খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করলেন,
বেয়ার্স রা শুধুমাত্র ডিভিশন তাই জেতেনি,
স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ তও জিতেছে,
পীচ কাউন্টিকে হারিয়ে।
২৮-১৪|
(হাসি )
কোচ পার্কার
এই সফলতাটি দনাকে উৎসর্গ করেছিলেন|
যখন আমরা আমাদের বাচ্চাদের
মৌলিক পুস্তিপ্রদান করি,
তারা উন্নতিলাভ করে|
এটা দেয়ার দায়িত্ব শুধুমাত্র
চেরিল বা দনার নয়|
দায়িত্ব আমাদের সবার|
আমাদের বাচ্চাদের মৌলিক পুষ্টি দেওয়াটা
শুরুর প্রথম পর্যায়|
আমরা যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ
সমস্যাগুলির
মুখোমুখি হই,তার একটা ক্ষুদ্রাকার
নকল আমি এখানে প্রদর্শন করলাম|
যদি আমাদের নিজেদের পুষ্টির
দিকে মনোযোগ দি,
তাহলে আমরা একটি স্থিশীল ও
নিরাপদ পৃথিবী পাবো;
আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে;
আমরা আমাদের সাস্থব্যবস্থার পরিবর্তন করতে পারি
এবং আমরা অনেক আগে এগোতে পারি
যাতে পৃথিবী আমাদের পরবর্তী
প্রজন্মের উন্নতি নিশ্চিত করে|
খাদ্য এমন একটা জায়গা দখল করে
যেটা আমাদের সামগ্রিক প্রচেষ্টায়
প্রভাব ফেলে|
আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে:
সঠিক প্রশ্নটি কি?
কি হবে
যদি আমরা আরো পুষ্টিকর
খাদ্য গ্রহণ করি?
তাহলে তার প্রভাব কি হবে?
চেরিল বারবারা,
দনা মার্টিন,
কোচ পার্কার এবং ব্রুক কাউন্টি বেয়ার্স -
আমার মনে হয় এনারা উত্তর তা জানেন|
আপনাদের সবাই কে ধন্যবাদ জানাই|
(সাধুবাদ)